বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুরে মদ খেয়ে মাতলানোর অভিযোগে সেবুল আহমদ (৪০) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।সে পার্শ্ববর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলার জলডুপ( পাড়িয়াবহর) গ্রামের সুনাম উদ্দিনের পুত্র।
বৃহস্পতিবার বাদ সন্ধ্যা উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে স্থানীয় জনতা প্রথমে তাকে আটক করে। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে শাহবাজপুর বাজারে মদ খেয়ে সেবুল আহমদ সহ দুইজন মাতলামি করছিলো৷ পরে স্থানীয় জনতা তাদের ধাওয়া করলে একজন পালিয়ে যায় এবং সেবুল আহমদকে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে আটক করা হয়। আটকের পর শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।
শাহবাজপুর তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পুলিশ পরিদর্শক রতন কুমার হালদার বলেন’ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে দলীয় প্রার্থীতার জন্য বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীরা সিভি জমা দিয়েছেন।
প্রার্থী বাছাই উপলক্ষে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা আজ শনিবার দুপুরে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম বড়লেখায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপির সভাপতিত্বে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর ‘র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য নেছার আহমদ এমপি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাহুুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক নিখিল কুমার দাস। বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি প্রনয় কুমার দে, সহ সভাপতি বিধান দাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিবেকানন্দ দাস নান্টু,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একে,এম হেলাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, পৌর মেয়র আবু ইমাম মো. কামরান চৌধুরী, আইন বিষয়ক সম্পাদক আদালতের এপি,পি, গোপাল দত্ত।
এছাড়াও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের একটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের সাবেক এক শীর্ষ নেতাকে চোয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ইকবাল হোসেন ইমাদ। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ৬ নং দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। ইমাদ ছাত্রশিবিরের উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার রাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড দক্ষিণ রণিখাই ইউপির দলীয় প্রার্থী হিসেবে ইমাদের নাম ঘোষণা করে। এরপরই থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। সাবেক শিবির নেতাকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীরাই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
তবে ইকবাল হোসেন ইমাদ দাবি করছেন, তিনি ১৫ বছর প্রবাসে ছিলেন। কখনো ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তার নামে ওই উপজেলার আরেকজন ছাত্রশিবির করতেন। এখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দুই নামকে গুলিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে বলে দাবি ইমাদের।
যদিও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন, ইমাদ ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। সংগঠনটির পদেও ছিলেন। এমনকি ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকগুলো স্ট্যাটাসও দিয়েছেন।
আর জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, ইমাদের বিরুদ্ধে ছাত্রশিবির করার অভিযোগ উঠলেও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের কমিটিতে আছেন। এছাড়া চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে তিনি তৃণমূলের ভোটেও এগিয়ে ছিলেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ইকবাল হোসেন ইমাদ ২০০৬-২০০৭ সালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। তার সময়ে সভাপতি ছিলেন আব্দুস শাকুর। ২০১৬ সাল পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৮ সালের দিকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি।
এরপর ২০১৯ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্যপদ লাভ করেন। আওয়ামী লীগে যোগদানের মাত্র দুই বছরের মধ্যে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে গেছেন ইমাদ।
ইমাদ ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন জানিয়ে দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজমুল ইসলাম বলেন, ইকবাল হোসেন ইমাদকে যখন আওয়ামী লীগের কমিটিতে সদস্য করা হয় তখনও আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু অর্থের প্রভাবে আমার প্রতিবাদ টেকেনি। অর্থের জোরেই এবার তিনি নৌকার প্রার্থী হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ নজমুলের।
ফেসবুকে ইকবাল এইচ. ইমাদ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধারপরাধী ও জামায়াত-শিবিরের পক্ষে এবং সরকারের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে পোস্ট দেওয়া হয়। ‘ইকবাল এইচ ইমাদ’ নামের অ্যাকাউন্টটি নৌকার মনোনয়ন পাওয়া ইকবাল হোসেন ইমাদের বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সূত্র। ওই অ্যাকাউন্টে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমাদের একাধিক ছবিও যুক্ত রয়েছে।
ওই অ্যাকাউন্ট থেকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছবি যুক্ত করে ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট লেখা হয়- ‘ফাঁসির দড়িটা কোথায়? দাও এক্ষুৃণি গলায় পরিয়ে। সাঙ্গ কর তোমাদের উল্লাস। স্বপ্নচারী নায়ক হেলেদুলে এগিয়ে যাবে সাজানো মঞ্চে। ভিলেন কুল তোমরা খুশি তো? চোখের কোণে চিন্তার রেখা ঢেকে দাও মেকাপের আস্তরে’।
২০১৪ সালের ২৫ অক্টোবর ওই অ্যাকাউন্ট থেকেই জামায়াতের প্রয়াত আমির যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের ছবি যুক্ত করে লেখা হয়- ‘অধ্যাপক গোলাম আযম একটি নাম, একটি ইতিহাস। তিনি বিশ্বনন্দিত ইসলামী চিন্তাবিদ। ভাষা আন্দোলনের নেতা, ঢাকসুর সাবেক জিএস, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপকার, এদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের উত্থান পতনের অন্যতম কারিগর’।
শিবিরের শীর্ষ পদে থাকা ও ফেসবুকে এসব স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইকবাল হোসেন ইমাদ সোমবার বলেন, আমি কখনই শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমার নামে আরেকজন আমাদের উপজেলা শিবিরের কমিটিতে ছিলো। তার বাবার নাম আব্দুন নুর আর আমার বাবার নাম আব্দুস সালাম।
তিনি বলেন, আমি ১৫ বছর প্রবাসে ছিলাম। দেশে এসে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত হই। তখন কেউ কিছু বলেনি। এখন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন চাওয়ার পরই একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে। আমার ছবি ও নাম দিয়ে ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে জামায়াত ও শিবিরের পক্ষে লেখালেখি করে। এসবের সাথে আমি যুক্ত নই।
সাবেক শিবির নেতার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বলেন, ইমাদের বিরুদ্ধে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ শুনেছি। তবে কোনো প্রমাণ পাইনি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী যে প্রার্থী এমন অভিযোগ তুলছেন তিনিও বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে এসেছেন।
নাসির বলেন, ইমাদ যখন আওয়ামী লীগের কমিটিতে এলেন তখন কোনো অভিযোগ উঠেনি। এখন অভিযোগ তোলা হলেও কেউ কোনো প্রমাণ দিচ্ছে না। ফেসবুকের কয়েকটি স্ক্রিনশট তো কোনো প্রমাণ হতে পারে না। তাছাড়া প্রার্থী বাছাই নিয়ে বৈঠকে তিনি তৃণমূলের সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাননি। তাই মনোনয়ন দিয়েছেন।
নাসির আরও বলেন, ওই উপজেলায় একসময় আওয়ামী লীগ খুবই দুর্বল ছিলো। বিভিন্ন দল থেকে লোকজন এনেই সংগঠনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। তাছাড়া প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলের প্রতি নিবেদনের পাশাপাশি তার জনসম্পৃক্ততার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি বলেছেন, ‘বার বছর আগের পুলিশ আর আজকের পুলিশ এক নয়, পুলিশ এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ২৫ শে মার্চের কালো রাতে পুলিশই প্রথম আক্রমণের শিকার হয় ও জীবন দেয়। পুলিশের অস্ত্র দিয়েই আমরা প্রথম যুদ্ধ শুরু করি।
পুলিশ এখন শুধু আধুনিক পুলিশ নয়, মানবিকও। আইনশৃঙ্খলার সাথে মানবিক স্বোও পুলিশ দিচ্ছে। করোনাকালীণ সেবা দিতে গিয়ে অনেক পুলিশ আক্রান্ত হয়েছেন ও মারা গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, করোনাসহ সব কিছু আমরা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের সব অর্জনের পিছনে রয়েছেন শেখ হাসিনা। তাঁকে হত্যার জন্য অসংখ্য বার চেষ্টা করা হয়। জনগণের দোয়ায় আল্লাহ তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন বলেই তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বাংলাদেশ আজ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে’।
শনিবার দুপুর ৩টায় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ৭ কোটি ৩১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৪তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন থানা ভবনের উদ্বোধন শেষে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি এ কথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রজন্মকে আমরা জঙ্গিবাদ থেকে যেভাবে রক্ষা করেছি, তেমনি ভাবে মাদক থেকেও রক্ষা করতে হবে। নতুবা সমাজ নষ্ট হবে। মৌলভীবাজার একটি সম্ভাবনাময়ী জেলা। সবাই মিলে জুড়ীকে সুন্দর করবেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যতটুকু সহযোগিতা দরকার আমরা করব।
মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া’র সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়ের পরিচালনায় অনুষ্টিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নেছার আহমদ এমপি, সংরক্ষিত আসনের এমপি সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফ, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা বদরুল হোসেন, জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক
সভার শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ক্বারী মিজান আহমদ। গীতা পাঠ করেন পন্ডিত সুবল চন্দ্র সিংহ। প্রধান অতিথিকে মানপত্র তুলে দেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস।
অনুষ্টানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান সুয়েব আহমদ, জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা, মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান, কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদ, বড়লেখা পৌর সভার মেয়র কামরান চৌধুরী, জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ, কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.স.ম কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনসহ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
বাচ্চাসহ সৌদিআরবে স্বামী শাহ আলমের কাছে চলে যাবার সব আয়োজন সম্পন্ন। গত ৫ আগস্ট মা-মে’য়ের পাসপোর্ট হাতে আসার পর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে মিলেছে ভিসা। চলে যাবার তারিখ পড়ার আগে প্রবাসী স্বামীর সর্ব’স্ব গু’ছিয়ে প্রে’মিককে নিয়ে রাতের আঁ’ধারে পা’লিয়ে যাওয়ার অ’ভি’যোগ উঠেছে রোকসানা আকতারের (২৩) বি’রু’দ্ধে। কক্সবাজার সদরের চৌফলদ’ন্ডী কালু ফকিরপাড়ায় এ ঘটনা পুরো এলাকায় চাঞ্চ’ল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে সবার অগোচরে পা’লানোর সময় স্বামীর পাঠানো নগদ ৬ লাখ টাকা, ১১ ভরি স্বর্ণালংকার, মুঠোফোনসহ দামী আরও নানা পণ্যসামগ্রী এবং দু’বছর বয়সী সন্তানকেও স’ঙ্গে নিয়ে গেছেন। ওইদিন ভোর হতে মঙ্গলবার সারাদিন নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর সেই গৃহবধূকে না পেয়ে কক্সবাজার সদর থা’নায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। নিরু’দ্দেশ হওয়া গৃহবধূ রোকসানা আকতার সদর উপজে’লার চৌফলদ’ন্ডী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কালু ফকিরপাড়ার সৌদি প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী’। দাম্পত্য জীবনে তাদের নুজাইফা ইস’লাম রাইসা নামে দু’বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
প্রবাসী শাহ আলমের ছোট ভাই জি’ডিতে উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের দিকে রামু উপজে’লার ঈদগড় ইউনিয়নের উত্তর শরীফপাড়ার নুরুল আজিমের মে’য়ে রোকসানার সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় শাহ আলমের। গত সোমবার (৪ অক্টোবর) ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে বাড়ির সবার অ’জ্ঞাত’সারে শি’শু সন্তানসহ নিরুদ্দেশ হয়। রুমে ঢুকে আলমিরা খোলা দেখে ত’ল্লা’শী করে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান কাপড়-চোপড় এবং অন্যান্য পণ্য সামগ্রীও পাওয়া যায়নি।
এরপরই খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারি আমাদের প্রতিবেশী জনৈক মোক্তার আহম’দের ছে’লে মো. রিদুয়ানের (২০) সঙ্গে প’রকী’’য়ার জে’র ধরে দুজন পালিয়ে গেছে। ঘটনার বিষয়ে তাদের বি’রু’দ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিলে প্রবাসী স্বামী, আমিসহ (জিডিকারি) পরিবারের অন্য সদস্যদের জড়িয়ে মি’থ্যা না’রী নি’র্যা’তন মা’মলা করবে বলে মোবাইলে হু’ম’কি দেয় রোকসানা।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করে প্রবাসী শাহ আলম প্রতিবেদককে বলেন, মে’য়েটি ভূ’মিষ্ঠ হবার পর হতেই আমা’র স্ত্রী’ রোকসানার পরকী’’য়ার বিষয়টি শুনছিলাম। তাকে জিজ্ঞেস করলে অ’স্বীকার করতো আর আমি ছুটিতে দেশে আসতে চাইলেই বেঁ’কে বসতো। বলতো ঘর বিল্ডিং করলেই আমি দেশে আসতে পারবো। প্রয়োজনে তাকে সৌদি আরব নিয়ে যেতে বলতো। স্ত্রী’র কথায় জরুরি পাসপোর্ট করে ভিসাও লাগানো হয়েছে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে। সামনের যেকোন দিন তাদের চলে আসা যাবে এটা জানিয়েছিলাম গত শুক্রবার (১ অক্টোবর)। সেটা বলার পরই আমা’র পাঠানো নগদ ৬ লাখ টাকা, ১১ ভরি স্বর্ণ, মোবাইল, দামি পণ্য সামগ্রী গুছিয়ে পরিচিতি সিএনজিটি ডেকে রাতের আঁ’ধারে নিরুদ্দেশ হয়েছে।
শাহ আলম আরও বলেন, বাবা-মা মা’রা যাবার পর আমাদের ৫ ভাইয়ের দুই ভাই এক ঘরে আর তিন ভাই আলাদা ঘরে বাস করি। আম’রা দুই ভাই এক ঘরে থাকি কিন্তু দু’জনই প্রবাসে। বাড়ির একপাশে আমা’র স্ত্রী’ আরেক পাশে অন্য ভাইয়ের স্ত্রী’ থাকতো। বাড়ির নিয়মিত কাজে ব্যবহার হওয়া যে সিএনজি করে চলে গেছে তার চালকের সঙ্গে আমা’র কথা হয়েছে। অ’সুস্থতার কথা বলে ফোন করে ডেকে সবকিছু নিয়েই তার গাড়িতে ওঠে রোকসানা। সাথে রিদুয়ানও ছিলো।
প্রথমে চালকের বাসায় গিয়ে পরে আমা’র শাশু’ড়ির কাছে যায় তারা। সেখান থেকেই নি’রুদ্দে’শ হয়। সে আমা’র সর্ব’স্ব লু’টে চলে গেছে। বিষয়টি রোকসানার চাচা তাদের ওয়ার্ড মেম্বারকেও অবহিত করা হয়েছে। তিনিও সিএনজি চালকের সাথে কথা বলে শি’ওর হন। কক্সবাজার সদর থা’নার ওসি (ত’দন্ত) বিপুল চন্দ্র দে জানান, এ সংক্রা’ন্ত একটি সাধারণ ডায়েরি পাওয়ার পর সদর থা’নার এসআই মোশাররফ হোসেনকে তদ’ন্ত করে ব্যবস্থা নিতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় রাস্তার পাশের জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) কাটার দায়ে মুহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যাক্তি কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
(৩ অক্টোবর) রবিবার সকালে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের করমপুর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসেন।অভিযানে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ১৫(১)ধারায় মাটির উপরি ভাগের (টপ সয়েল) কাটায় এক ব্যাক্তিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে তা আদায় করা হয়। এসময় বড়লেখা থানার পুলিশ সহযোগিতা করে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে রবিবার সকালে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের করমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় অভিযান চালান উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসেন। রাস্তার পাশের জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) কাটার দায়ে মুহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যাক্তিকে কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও আদায় করা হয়।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসেন রবিবার দুপুর ২ টায় মুঠোফোনে বলেন, রাস্তার পাশের জমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) কাটার অপরাধে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে এক ব্যাক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও আদায় করা হয়েছে। পাহাড়, টিলা ও জমির উপরিভাগে মাটির টপসয়েল কর্তন করে অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধে এধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় গাছ কাটার সময় মাথায় ডাল পড়ে আহত হাবিবুর রহমান (৪৫) মারা গেছেন। শনিবার (০২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আজ রোববার (০৩ অক্টোবর) সকালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত হাবিবুর রহমান বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ডিমাই (বতাউড়া) গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে।
স্বজনরা জানান, কাল শনিবার দুপুরে হাবিবুর রহমান উপজেলার মাইজগ্রাম এলাকায় একটি বাড়িতে গাছ কাটছিলেন। এসময় ওই গাছের একটি ডাল তার মাথার ওপর পড়ে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিন সন্ধ্যায় হাবিবুর মারা যান।
বড়লেখা সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য লুৎফুর রহমান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে আজ রোববার সকালে বলেন, হাবিবুর রহমান দিনমজুর। মানুষের বাড়িতে গাছ কেটে তিনি কোনোরকম সংসার চালাতেন। হাবিবুরের মৃত্যুতে তার পরিবারটি এখন অসহায় হয়ে পড়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে গত বুধবার রাতে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে উত্তেজিত হয়ে উঠেছে মুহিবুল্লাহর পরিবার ও তার অনুসারীরা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নেতা মো. মুহিবুল্লাহ হত্যার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। জঘন্য ওই অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করতে তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চেয়েছেন।
আজ শুক্রবার (১ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে মুহিবুল্লাহ হত্যার বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ আহ্বান জানান। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের ওই বিবৃতিটি প্রচার করা হয়েছে। মুহিবুল্লাহের হত্যা নিয়ে বিবৃতি দিল আমেরিকার।
অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর হত্যার খবর আমাদের গভীরভাবে মর্মাহত ও পর্যুদস্ত করেছে। সারা বিশ্বে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সুরক্ষায় তিনি ছিলেন এক সাহসী এবং শক্তিশালী প্রচারক। তিনি জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের পাশাপাশি ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক মন্ত্রীপর্যায়ের সভায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ধর্মীয়ভাবে নিপীড়িত হওয়া জনগোষ্ঠী হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঘন্য ওই অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে আমরা তাঁর হত্যার পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানাই। আমরা রোহিঙ্গাদের পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রেখে এবং রোহিঙ্গারা নিজেদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে উচ্চকণ্ঠ হতে পারে, সে জন্য সহায়তার মাধ্যমে তাঁর কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানাব।
এদিকে অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন তাঁর টুইটে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। সারা বিশ্বে রোহিঙ্গাদের পক্ষে একজন সাহসী নেতা হিসেবে তিনি বেঁচে থাকবেন।
একইভাবে ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফানি ট্রেম্বলে বলেছেন, ‘বাংলাদেশি প্রশাসনের কাছে আমরা এই ঘটনা নিয়ে দ্রুত তদন্তের আর্জি জানিয়েছি। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
সংবাদসংস্থা ডিপিএ-কে বাংলাদেশের ইনভেস্টিগেটিং অফিসার শাকিল আহমেদ জানিয়েছেন, ”ঘটনার তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমরা আশাবাদী।” ক্যাম্পের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে প্রশাসন এখনো পর্যন্ত কারা এই হত্যার পিছনে জড়িত, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। এর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের যোগাযোগের বিষয়টিও সামনে আনেনি।
মুহিবুল্লাহের ভাই অবশ্য সরাসরি সন্ত্রাসী যোগের অভিযোগ তুলছেন। তার বক্তব্য, আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি আর্মি (এআরএসএ) বা আরসা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। মুহিবুল্লাহকে তারা হুমকি দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছেন তার ভাই এবং বন্ধুরা।
দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করছিলেন মুহিবুল্লাহ। তিনি জেনেভায় জাতিসংঘের সভায় বক্তৃতা করেছেন। দেখা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছিলেন তিনি। সূত্র- ডিপিএ, রয়টার্স।